সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বয়স বেড়েছে ক্বিন ব্রিজের। ব্রিজের
মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার এখন এখানে ভারী যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ । যার
পরিপ্রেক্ষিতে নির্মিত হয়েছে বিকল্প কয়েকটি সেতু। তবে বয়স বাড়লেও এতটুকু ম্লান হয়নি এর সুন্দর্য । পর্যটকের কাছে এই ব্রিজ এখনো সমান আকর্ষণীয় । প্রতিদিনই ক্বিন
ব্রিজের নান্দনিকতা প্রত্যক্ষ করে হাজারো মানুষ ।

Sylhet King Bridge
নৈসর্গিক সৌন্দর্যের নগরী সিলেট। প্রকৃতি এ জনপদের
সাজিয়েছে অপরুপ সাজে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে হাজারো পর্যটক ছুটে আসেন
এখানে।শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যি নয়, ঐতিহ্যবাহী
নান্দনিক সব স্থাপনা শহরের সৌন্দর্যবর্ধনে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা। এমনি এক নান্দনিক স্থাপত্যশৈলী ক্বিন ব্রিজ । সুরমা নদীর ওপর
স্থাপিত এ সেতুটি সিলেট নগরীর ঐতিহ্যের অংশ । স্টিলে তৈরি লাল রঙের এই ব্রিজটি
সিলেটি পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণ ।
ক্বিন ব্রিজকে বলা হয় সিলেট শহরের প্রবেশদ্বার । সিলেট শহরেকে দুই ভাগে ভাগ করেছে সুরমা নদী । এই নদীর উত্তর পারে মূল শহর আর দক্ষিন পারে রেলস্টিশন আর কেন্দ্রিয় বাসটার্মিনাল । আগে এই ব্রিজই ছিল শহরে প্রবেশের একমাত্র উপায় । কিন্তু সমইয়ের সঙ্গে সঙ্গে বয়স বেড়েছে কিং ব্রিজের । ব্রিজের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় এখন এখানে ভারী যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ । যার পরিপ্রেক্ষিতে নির্মিত হয়েছে বিকল্প কয়েকটি সেতু । তবে বয়স বাড়লেও এতটুকু ম্লান হয়নি এর সৌন্দর্য । পর্যটকদের কাছে এই ব্রিজটি এখনো সমান আকর্ষনিয় ।
ক্বিন ব্রিজকে বলা হয় সিলেট শহরের প্রবেশদ্বার । সিলেট শহরেকে দুই ভাগে ভাগ করেছে সুরমা নদী । এই নদীর উত্তর পারে মূল শহর আর দক্ষিন পারে রেলস্টিশন আর কেন্দ্রিয় বাসটার্মিনাল । আগে এই ব্রিজই ছিল শহরে প্রবেশের একমাত্র উপায় । কিন্তু সমইয়ের সঙ্গে সঙ্গে বয়স বেড়েছে কিং ব্রিজের । ব্রিজের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় এখন এখানে ভারী যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ । যার পরিপ্রেক্ষিতে নির্মিত হয়েছে বিকল্প কয়েকটি সেতু । তবে বয়স বাড়লেও এতটুকু ম্লান হয়নি এর সৌন্দর্য । পর্যটকদের কাছে এই ব্রিজটি এখনো সমান আকর্ষনিয় ।
পূর্বকথা
সিলেটের বুকে চিরে বয়ে গেছে সুরমা নদী । ক্বিন ব্রিজ
নির্মাণের আগে নদী পার হতে হতো নৌকা যোগে। ক্রমবর্ধ্মান জনসংখ্যা চাপে বেড়েছে
সিলেট নগরীর আয়তন । তা ছাড়া সেই সময়ে ভারতের আসাম রাজ্যের সঙ্গেও এ নগরের ছিল রেল
যোগাযোগও । সংগত কারণেই সুরমা নদীর ওপরে দেখা দেয় ব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা ।
১৮৮৫ সালে গঠিত হয় সিলেট
মিউনিসিপ্যাল্টি কমিটি। এই কমিটি ব্রিজের
নির্মাণের ব্যাপারে সচেষ্ট ছিল। গত শতকের ত্রিশের দশকে আসামের গভর্নর ছিলেন মাইকেল
ক্বিল। গভর্নর থাকাকালীন তিনি সিলেট সফরে আসেন । তাঁর স্মৃতিকে অম্লান করে রাখতেই
১৯৩৩ সালে ব্রিজটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয় আসাম রেল বিভাগ। ১৯৩৬ সালে সম্পন্ন হয়
সেতুটির নির্মাণকাজ , যার নাম রাখা হয় ওই গভর্নরের নামেই । তৎকালীন এই সেতুটি
নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ৫৬ লাখ টাকা ।
ক্বিন ব্রিজের গঠন
যেহেতু ব্রিজটি
ব্রিটিশ আমলের স্থাপনা, তাই এই স্থাপত্যশৈলীতে ফুটে উঠেছে ব্রিটিশ ব্রিজের আদল।
ব্রিজের দুই ধারে রয়েছে সাদা রঙের দুটি গেট ,যা দেখলে মনে হবে আপনি লন্ডনের কোনো
ব্রিজ দেখছেন। এই সেতুটির দৈর্ঘ্যে ৩৯৫ মিটার আর প্রস্থে ৫.৫০ মিটার সেতুটির
মাঝখানটা সমতল আর দুই পাশ সম্পর্ণ ঢালু । এর আকৃতি অনেকটা ধনুকের ছিলার মতো
বাঁকানো । মুলত ব্রিজের নিচ দিয়ে জাহাজ ও বড় নৌকা নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্যই এই রকম
আকৃতি ।
ক্বিন ব্রিজ নির্মানে অত্যন্ত শক্তিশালী মাইল্ড স্টিল ব্যবহার করা হইয়েছে। দুই পাশে ব্যবহার করা হয়েছে দুটি শক্তিশালী স্টিল স্প্যান ,যা পুরো ব্রিজকে নদীর ওপরে ধরে রেখেছে ।
মুল স্প্যান দুটির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে শত শত বিভিন্ন আকারের স্টিল প্যানেল ,যা সেতুকে শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি বাড়িইয়ে তুলেছে সৌন্দর্যকেও। এ ছাড়া নদীর দুই পাশে ব্যবহার করা হয়েছে অসংখ্য ল্যাম্পপোস্ট। এই ল্যাম্পপোস্টের আলো রাতের অন্ধকারে সেতুটিকে দিয়েছে স্বর্গীয় এক শোভা।
ক্বিন ব্রিজ নির্মানে অত্যন্ত শক্তিশালী মাইল্ড স্টিল ব্যবহার করা হইয়েছে। দুই পাশে ব্যবহার করা হয়েছে দুটি শক্তিশালী স্টিল স্প্যান ,যা পুরো ব্রিজকে নদীর ওপরে ধরে রেখেছে ।
মুল স্প্যান দুটির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে শত শত বিভিন্ন আকারের স্টিল প্যানেল ,যা সেতুকে শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি বাড়িইয়ে তুলেছে সৌন্দর্যকেও। এ ছাড়া নদীর দুই পাশে ব্যবহার করা হয়েছে অসংখ্য ল্যাম্পপোস্ট। এই ল্যাম্পপোস্টের আলো রাতের অন্ধকারে সেতুটিকে দিয়েছে স্বর্গীয় এক শোভা।
যুদ্ধের ক্ষত
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী
ডিনামাইট দিয়ে ব্রিজটির উত্তঅর পাশে কিছু অংশ ধ্বংশ করে দেয় ।স্বাধীনতার পরে
সেটুকু সাময়িক মেরামত করা হয় ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ের সহায়তায় বিধ্বস্ত অংশটুকু
কংক্রিট দিয়ে পুনরায় নির্মান করা হয়।
ব্রিজ সংলগ্ন আলী আমজাদের ঘড়ি
ক্বিন
ব্রিজের ঠিক পাশেই চাদনীঘাটে রয়েছে সিলেট শহরের বিখ্যাত আরেক ঐতিহ্য আলী আমজাদের
ঘড়ি । একটি চৌকানো ঘরের মাথায় স্থাপন করা হয়েছে বিশালকৃতির এই ঘড়িটি । তৎকালীন
সিলেট অঞ্চলে গড়ির অবাধ প্রচলন ছিল না , মানুষ সূর্যের দিকে তাকিয়ে সময় হিসাব করত
।স্থানীয় লোকজনের সময় দেখার সুবিধার্থে নির্মান করা হয় ঘড়িঘরটি । ১৮৭৪ সালে
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশার জমিদার আলী আমজাদ খান ঘড়িটি স্থাপন করেন
। তৎকালীন বড়লাট লর্ড নর্থ ব্রুক সিলেট সফরে এলে তাঁর সম্মানে নির্মিত হয় এটি ।
বিশাল
আকৃতির এই গড়িটির ডায়া আড়াই ফুট আর কাঁটা দুই ফুট লম্বা। ২৪ ফুট ৩ ইঞ্চি উঁচু
ঘড়িঘরটির প্রস্থ ১৬ ফুট ৭ ইঞ্চি । মাঝে কর্তিপক্ষের অবহেলার কারণে প্রাচীন
শ্রীহট্রের এ ঐতিহাসিক নিদর্শনটি অচল ছিল বেশ কয়েক বছর । মুক্তিযুদ্ধের এটি
হানাদার বাহীনির গোলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ১৯৮৭ সালে যা সস্কার করা হয় । পরে
২০১১ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন এই ঘড়িটিকে পনরায় মেরামত করে।
কৃতজ্ঞতা ঃ
ড. জহির বিন আলম, অধ্যাপক ,সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল
ইঞ্জিনিয়ারিং , শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ; উৎপল সামান্ত ,
নির্বাহী প্রকৌশলী ,সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সিলেট ।
লেখকঃ মোঃ ওমর ফারুক +
তাওহীদ রাসেল
nice post
ReplyDeletePost a Comment